আকস্মিক বৃষ্টির পানিতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দেশের ১২ জেলায়। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন ও ক্ষতির মুখে পড়েছেন ৩৬ লাখ মানুষ। বন্যার্তদের সহায়তায় পাঁচ জেলায় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ ও খাদ্য বিতরণ করছেন সেনাসদস্যরা। দেশের এই পরিস্থিতির জন্য সোশ্যাল মিডিয়াই অনেকে দাবি করছে ভারতকে। বাংলাদেশ সরকারকে না জানিয়েই বাংলাদেশ মুখি বাঁধের গেট খুলে দিয়েছে ভারত সরকার এরকমও দাবি করছে অনেকে। এই আবহে একটি ভিডিও শেয়ার করে সেটিকে ভারতের ত্রিপুরার ডাম্বুরা বাঁধ থেকে জল ছাড়ার ভিডিও বলে দাবি করা হচ্ছে।

ক্যাপশনে লেখা হয়েছে,”ভারতের ত্রিপুরায় অবস্থিত ডাম্বুর হাইড্রইলেক্ট্রিক পাওয়ার প্রজেক্ট বা ডাম্বুর গেট খুলে দেয়া হয়েছে কারণ ত্রিপুরাতে ব্যা'প'ক ব'র্ষণ হয়েছে ফলে বন্যা দেখা দিয়েছে। পানি কমার জন্য তারা ড'ম্বু'র গেট খুলে দিয়েছে যা সর্বশেষ ১৯৯৩ সালে খু'লে দিয়েছিলো। বন্যার পানি কমে যাবে এমন আশা করবেন না। গেটটি খু'লে দেয়ার ফলে ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী জেলা সমূহ প্লাবিত হবার সম্ভাবনা রয়েছে।। আজকের সুপ্তধারার ভিডিও।“

তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি যে ভিডিওটি ত্রিপুরায় অবস্থিত ডাম্বুর হাইড্রইলেক্ট্রিক পাওয়ার প্রজেক্ট বা ডাম্বুর বাঁধ থেকে জল বেরোনোর নয়। ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে রাজ্যে অবস্থিত শ্রীসাইলাম বাঁধের ভিডিওকে ভুয়া দাবির সাথে শেয়ার করা হচ্ছে।

ফেসবুক পোস্ট, ফেসবুক পোস্ট

তথ্য যাচাইঃ

এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে গুগলে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃত খুঁজে পাওয়া যায় যেখানে জানানো হয়েছে - ভারত গোমতী নদীর উপর নির্মিত ডাম্বুর বাঁধের গেট খোলা হয়নি। গত ২১ তারিখ থেকে ত্রিপুরা রাজ্যেও রেকর্ড মাপের অবিরাম বৃষ্টির দরুন সেই রাজ্যেও বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ডাম্বুরা জলাধারটির সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা ৯৪ মিটার। জলস্তর সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতার বেশি হয়ে যাওয়াই জলাধারের স্বয়ংক্রিয় ভাবেই বাঁধের দুটি স্লুইস গেট খুলে কিছু জল প্রবাহিত হয়ে যায় বাংলাদেশের দিকে বেরোচ্ছে। বাংলাদেশে এ বন্যা মূলত বাঁধের ভাটার (নিম্নপ্রবাহের) দিকের বৃহৎ অববাহিকার বৃষ্টিজনিত জলপ্রবাহের কারণে ঘটেছে।

তারপর, আমরা ভাইরাল ভিডিওর আসল উৎস খুঁজতে ভিডিওর কি ফ্রেমকে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলে, একই রকমের বেশ অনেকগুলো ভিডিও ইউটিউবে পেয়ে যায়। সব ভিডিওতেই এটিকে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীসাইলাম বাঁধের দৃশ বলে জানাই।

গুগল ম্যাপ্সও নিশ্চিত করে যে, ভিডিওর বাঁধটি শ্রীসাইলাম বাঁধ।

ভারতের ম্যাপে অন্ধ্রপ্রদেশের অবস্থান নীচের মানচিত্রে দেখুন। বাংলাদেশ থেকে অন্দ্রপ্রদেশের দূরত্ব ১৬০০কিমি-এরও বেশি।

নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডো এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, ভিডিওতে প্রদর্শিত ভিডিওটি ত্রিপুরার ডাম্বুরা বাঁধের নয় বরং অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের শ্রীসাইলাম বাঁধের যা বাংলাদেশের সাথে যুক্ত নয়।

Avatar

Title:ভারতের শ্রীসাইলাম বাঁধের ভিডিওকে ত্রিপুরার ডাম্বুরা বাঁধ দাবি করে বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতির আবহে শেয়ার

Fact Check By: Nasim Akhtar

Result: Misleading