
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ফিলিস্তিনের পাশে দাড়াতে ইজরায়েল বনাম আর্জেন্টিনা ম্যাচ বাতিল করলেন বিশ্ব বিখ্যাত ফুটবলার মেসি। পোস্টে মোট দুটি ছবি রয়েছে যার মধ্যে একটিতে দেখা যাচ্ছে মেসির একটি উক্তি লেখা রয়েছে এবং অন্যটিতে কয়েকজন ছেলে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাড়িয়ে আছে। প্ল্যাকার্ডে ইংরেজি ভাষায় লেখা রয়েছে, “ফিলিস্তিনের তরফ থেকে ধন্যবাদ আর্জেন্টিনা”। পোস্টের ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, “২০২২ বিশ্বকাপ এর প্রস্তুতি হিসাবে ইসরাইল বনাম আর্জেন্টিনা প্রাতি ম্যাচ নির্ধারিত ছিলো। জেরুজালেম ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু মেসির সরাসরি হস্তক্ষেপে তা বাতিল হয়ে যায়। মেসি সেই ম্যাচটি নিয়ে বলেন, “জাতিসংঘের শুভেচ্ছাদূর হিসাবে আমি তাদের বিপক্ষে কখনোই খেলতে পারি না। যারা নির্দোষ শিশুদের হত্যা করে। আমাদের এই ম্যাচটি বাতিল করতে হয়েছে কারন আমার ফুটবলার বটে কিন্তু তার আগে আমার মানুষ “❤️………”।
তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি এই দাবি ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিকর। ২০১৮ সালের ঘটনাকে ইজরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘর্ষের সাথে যুক্ত করে ভুয়ো পোস্ট ভাইরাল করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি ফের ইজরায়েল ও ফিলিস্তিনের বহু প্রাচীন সংঘর্ষের আগুন জ্বলে উঠেছে। এবার ঘটনাস্থল জেরুজালেমের আল-একসা মসজিদ। ইতিমধ্যেই সংঘর্ষ রীতিমতো বড় আকার ধারণ করেছে দুপক্ষের মধ্যে। একে অপরের দিকে নিশানা করে চলে রকেট নিক্ষেপ। সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত ১৯২ জন প্রান হারিয়েছে যার মধ্যে ৫৫ জন শিশু এবং ৩৩ জন মহিলা। অন্যদিকে, হামাসের রকেট হামলায় দুজন ইজরায়েলি প্রান হারিয়েছে যার মধ্যে একজন ভারতীয় বলে জানা গিয়েছে।
সংযুক্ত রাষ্ট্র সুরক্ষা পরিষদের সদস্য় এবং মুসলিম দেশের বিদেশ মন্ত্রীদের বৈঠক হয়েছে। ইজরাযেল ও হামাস জঙ্গি গোষ্ঠীর মধ্য়ে এক সপ্তাহ ধরে যুদ্ধ চলছে। বহু সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তা ছাড়া দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ দ্রুত রোখা না গেলে বহু সাধারণ মানুষ প্রাণ হারাবেন বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর এবার মুসলিম দেশের বিদেশ মন্ত্রীরা এই ব্য়াপারে আমেরিকার হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।
তথ্য যাচাই
প্রথমের ছবির লেখা থেকে কিছু শব্দ নিয়ে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ করে জানতে পারি ২০১৮ সালেও মেসির এই উক্তিটি ভাইরাল হয়েছিল। মেসি এমন মন্তব্য করেছেন তার কোনও প্রমাণ মেলেনি। ২০১৮ সালে ‘টাইমস অফ ইসরায়েল’ নামে একটি সংবাদমাধ্যম জানায় এটি ভুয়ো।
এরপর দ্বিতীয় ছবিটিকে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে সংবাদমাধ্যম ‘দ্যা হিন্দু’র ওয়েবসাইটে এই ছবিকে দেখতে পাই। ২০১৮ সালের এই প্রতিবেদন থেকে জানতে পারি, ২০১৮ সালে ফিলিস্তিনের বিক্ষোভ চলাকালীন ইজরায়েলি বাহিনীর নির্বিচারে গুলিতে অন্তত ১২০ জন নিহত হন। সেই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন মেসি। যার জেরে, ইজরায়েলে আর্জেন্টিনা খেলতে গেলে মেসিকে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়। ফলে, ইজরায়েলের সাথে আর্জেন্টিনার প্রস্তুতি ম্যাচ বাতিল করা হয়। এরপর মেসি-সহ আর্জেন্টিনা দলের এই সিদ্ধান্তের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয় গোটা ফিলিস্তিন। ফিলিস্তিন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন এক বিবৃতিতে লিওনেল মেসি ও গোটা আর্জেন্টিনা টিমকে ধন্যবাদ জানায়।

নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুল। ২০১৮ সালের ঘটনাকে ইজরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘর্ষের সাথে যুক্ত করে ভুয়ো পোস্ট ভাইরাল করা হচ্ছে।

Title:২০১৮ সালের ম্যাচ বাতিলের ঘটনাকে ইজরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘর্ষের সাথে যুক্ত করে ভুয়ো পোস্ট ভাইরাল
Fact Check By: Rahul AResult: False