
কোটা সংস্কার আন্দোলনের খবর এখন ট্রেন্ডিং-এ। এই আন্দোলনে আকস্মিক ভাবেই বেড়ে উঠেছে শেখ হাসিনার এক মন্তব্যে যেখানে তিনি আন্দোলনকারীদের রাজাকার বলে সম্বোধন করে। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে দেশের ব্যাস্ত শহর গুলো আপাতত অচল হয়ে পড়েছে। আন্দোলনের তীব্রতাকে নিয়ন্ত্রনের আনতে বিশাল সংখ্যায় পুলিশ রাস্তায় নেমেছে এবং চলমান সংঘাত ও সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে সারাদেশে মোতায়েন করা হয়েছে বিজিবি। পুলিশ ও ছাত্রলীগ–যুবলীগ নেতা–কর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষেরমৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় চল্লিশ। কোনো আন্দোলনকে কেন্দ্র করে একদিনে মৃত্যু হয়েছে ছয় জনের যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেখা যায়নি। কোটা আন্দোলনের এই প্রেক্ষিতে একটি সংবাদ উপস্থাপন শেয়ার করা হচ্ছে যেখানে পুলিশের বর্বরতার দৃশ্য দেখে লাইভ টিভিতেই কাঁদছেন সংবাদ উপস্থাপক মহিলা। দাবি করা হচ্ছে যে, কোটা বিরোধী আন্দোলনের ভিডিও বাইরের দেশের সংবাদ মাধ্যম দ্বারা সম্প্রচার করা হচ্ছে। ভিডিওর উপর লেখা হয়েছে,’বাহিরের রাষ্ট্র নিউজ চ্যানেলের অবস্থা দেখেন আর আমাদের বাংলাদেশের নিউজ চ্যানেলে হাস্যকর বানিয়ে দিচ্ছে।‘
পোস্টের ক্যাপশনে লেখা হয়েছে,”আজব ব্যাপার যারা রাজাকার তাদের মাথায় বাংলাদেশের পতাকা, আর যারা দেশ প্রেমিক তাদের মাথায় হেলমেট!”
তথ্য যাচাই করে আমরা পেয়েছি দাবিটি ভুয়া। ভিডিওটি সম্পাদিত।
তথ্য যাচাইঃ
ভিডিওর সত্যতা যাচাই করতে ভিডিওর কি ফ্রেমগুলোকে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলে, সিরিয়ার সংবাদ মাধ্যম ‘Baladi News Network’এর ফেসবুক পেজে সংবাদ উপস্থাপনের সময় উপস্থাপকের কাঁদার ভিডিওটি পাওয়া যায়। ২০১৯ সালের ২৬ জুলাই তারিখে পোস্ট করা এই উপস্থাপনের শিরোনামে লেখা হয়েছে,”সিরিয়ার সম্প্রচারক ইদলিবে সামরিক অভিযান সম্পর্কে কথা বলার সময় কাঁদছে।“
এই ভিডিও উপস্থাপনের স্ক্রিনে বাংলাদেশ পুলিশের বর্বরতা দেখা যাচ্ছে না বরং সেখানে রয়েছে এক শিশুর ছবি এবং পরের স্লাইডে দেখা যাচ্ছে এক জোড়া বুটের ছবি যা উপর থেকে ক্যামেরাবন্দি করা হয়েছে।
ইরানের সংবাদ মাধ্যম ‘ইরানি ফ্রিডম’-এর এক্স প্রোফাইল থেকেও সংবাদ উপস্থাপনের সময় মহিলা উপস্থাপকের কাঁদার ভিডিওটি ২৫ মে,২০২৪, তারিখে পোস্ট করা এটিকে সিরিয়ার বলে জানিয়েছেন এবং ক্যাপশনের মাধ্যমে জানিয়েছেন যে, আসল ভিডিওটি সিরিয়ার একটি খবরের সাথে সম্পর্কিত যেখানে উপস্থাপক ইদলিব প্রদেশ এবং সিরিয়ার অন্যান্য অঞ্চলে শিশুদের হত্যার ক্ষেত্রে বাশার আল-আসাদের সরকারের অপরাধ সম্পর্কে কথা বলছেন। তিনি যখন আসাদের হেলিকপ্টারের ভিতর থেকে খান শেখউনের লোকজনের উপর বিস্ফোরক ব্যারেল ফেলে আসাদের একটি ছবি দেখান তখন তিনি কেঁদে ফেলেন।
নীচে তুলনামূলক ভিডিও ফ্রেমটি দেখুনঃ
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডো এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে বাইরের দেশের সংবাদ মাধ্যম কর্তৃক কোটা বিরোধী আন্দোলনে পুলিশের বর্বরতার দৃশ্য দেখতে গিয়ে কেঁদে ফেলার দাবিটি ঠিক নয়। ভিডিওটি সম্পাদিত। আসল ভিডিওটি সিরিয়ার একটি খবরের সাথে সম্পর্কিত যেখানে উপস্থাপক ইদলিব প্রদেশ এবং সিরিয়ার অন্যান্য অঞ্চলে শিশুদের হত্যার ক্ষেত্রে বাশার

Title:না, কোটাবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের বর্বরতার দৃশ্য দেখে কাঁদছেন না সংবাদ উপস্থাপক
Fact Check By: Nasim AkhtarResult: Altered