
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের জেরে আগস্ট মাসে ছেড়ে পলায়ন করে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপর থেকেই ভারতেই অবস্থান করছেন বলে সংবাদ মাধ্যমের খবর। এই প্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর একটি ছবি সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে, নরেন্দ্র মোদী ও শেখ হাসিনা লাদাখ সফরে গিয়েছেন।
ছবিটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে,”ভারত চিন সিমান্ত উত্তেজনার মধ্যে লাখাদে গিয়েছে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদী – হিন্দুস্তান টাইমস।“
তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি ছবিটি সম্পাদিত।
তথ্য যাচাইঃ
এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে আমরা প্রথমে গুগলে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ করি। কিন্তু এমন কোনো সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি যেখানে ভাইরাল দাবিটি সত্য হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। যদি দুই জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ একসাথে লাদাখ সফরে যেতেন তাহলে এটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হতো। এই খবরের অভাবে দাবিটি বিভ্রান্তিকর বলে মনে হয়।
তারপর পোস্টের ছবি বিস্তারিত জানতে ছবিটিকে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলে, একই রকমের একটি ছবি ‘larseklund’ নামক এক ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনে পাওয়া যায়। যার শিরোনামে লেখা হয়েছে,”বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লুন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর বক্তৃতা দিয়েছেন।“
এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, শেখ হাসিনা ২০০৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর সুইডেনের লুন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্রমণ করেন। এর আগে, ২০০৯ সালের ৭-১৯ ডিসেম্বর ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় ইউএন ক্লাইমেট চেইঞ্জ কনফারেন্স (COP15), যেখানে তিনি বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এই কনফারেন্সে বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশগত সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল এবং শেখ হাসিনা এ নিয়ে তার অবস্থান তুলে ধরেন।
প্রতিবেদনের ছবির সঙ্গে আলোচিত ছবির মধ্যে শুধু মোদির ছবি ছাড়া সবকিছুই একই। যা থেকে বোঝা যায় যে নরেন্দ্র মোদির ছবি ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে যুক্ত করা হয়েছে।
সুইডিশ সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ নেটওয়ার্কে প্রকাশিত এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনের আর্কাইভ সংস্করণ পাওয়া যায়। সেই প্রতিবেদনে একই ছবি সহ একই তথ্য পাওয়া যায়।
নীচে ভাইরাল ছবি ও আসল ছবির তুলনামূলক ফ্রেমটি দেখুনঃ
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডো এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, মোদির সাথে শেখ হাসিনার লাদাখ সফরের ছবি দাবি করা ছবিটি সম্পাদিত। শেখ হাসিনার ছবিটি ২০০৯ সালে সুইডেনের লুন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে তোলা হয়েছে এবং সেই ছবিতে মোদীর ছবি নেই।