
দেশ ছেড়ে পলায়নের পর থেকেই ভারতেই অবস্থান করছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা তথা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতিমধ্যে, বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে শেখ হাসিনার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক সহায়তা চাওয়া হবে। প্রত্যর্পণ দাবি করে কূটনৈতিক নোট পাঠিয়েছে। এই প্রেক্ষিতে তার একটি ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে, ভারতে অবস্থানরত অবস্থায় আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন শেখ হাসিনা। পোস্টের পোস্টার কার্ডে শেখ হাসিনাকে ক্যামেরা সেটআপের সামনে সাক্ষাৎকার দেওয়ার মত অবস্থায় সোফাতে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে। সেই পোস্টার কার্ডে লেখা হয়েছে- একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে সাক্ষাতকার প্রদান করছেন বাংলাদেশের সাংবিধানিক ও বৈধ প্রধানমন্ত্রীর মর্যদায় ভারতে অবস্থানরত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ছবিটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে,”জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবেই দেশে ফিরবেন এবং রাষ্ট্রপতি নিজেই এয়ারপোর্টে যাবে রিসিভ করতে, সাথে থাকবে তিন বাহিনীর প্রধান! Update আসছে…..।“
তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে আমরা পোস্টের দাবিটিকে ভুয়া হিসেবে পেয়েছি। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া এই সাক্ষাৎকারটি সম্প্রতির নয় বরং ২০২৩ সালের। প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় বাংলাদেশের মাটিতে বসেই কানাডিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ‘সিবিস’কে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন তিনি।
তথ্য যাচাইঃ
এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে আমরা ছবিটিকে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলে, এই ছবি সম্বলিত ‘একুশে সংবাদ’-এর একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। ১৭ নভেম্বর,২০২৩, তারিখের এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিজ হাতে গুলি করে খুন করা এসএইচএমবি নূর চৌধুরীকে নিয়ে বিশদ একটি অনুসন্ধানী ভিডিও প্রতিবেদন তৈরি করছিল কানাডিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সিবিসির অনুসন্ধানী বিভাগ ‘দ্যা ফিফথ স্টেট’। এই অনুসন্ধানী ভিডিও প্রতিবেদনের জন্য ‘সিবিসি’ সাংবাদিক দল শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। পোস্টের ছবিটি সেই সাক্ষাৎকারের ক্যামেরার পেছনের দৃশ্য।
একুশে সংবাদ প্রতিবেদন | আর্কাইভ |
আমরা সেই অনুসন্ধানী ভিডিও প্রতিবেদনটি খুঁজে বের করি। ভিডিওটি ‘The Fifth Estate’ এর ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৩ সালের ২৩ নভেম্বরে আপলোড করা হয়েছে যার শিরোনামে লেকাহ হয়েছে,” বাংলাদেশের প্রথম প্রেসিডেন্টের হত্যাকারী কেন কানাডায় মুক্ত। এই ভিডিওতে শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকারের ক্লিপটুকু দেখে জলের মত স্পষ্ট হয় যে পোস্টের ছবি এই সাক্ষাৎকারের সময়ে ক্যামেরার সেটআপের পেছন থেকে তোলা দৃশ্য।
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডো এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, ভারতে অবস্থানরত অবস্থায় শেখ হাসিনা কর্তৃক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেওয়ার দাবিটি ঠিক নয়। বাংলাদেশের মাটিতে বসে ২০২৩ সালে সিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারের দৃশ্যকে বিভ্রান্তিকর দাবির সাথে শেয়ার করা হচ্ছে।

Title:ভারতে অবস্থানরত অবস্থায় শেখ হাসিনা কর্তৃক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার দাবিটি মিথ্যা
Fact Check By: Nasim AkhtarResult: False