
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ছবি স্পষ্ট করে দাবি করা হচ্ছে, যুদ্ধবিরতির পরেও ফিলিস্তিনি যুবকদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল পুলিশ।
প্রসঙ্গত, পূর্ব জেরুজালেমে আল-আকসা মসজিদ চত্বরে ইসরায়েলি পুলিশের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষের জেরে ইসরায়েল ও গাজা নিয়ন্ত্রণকারী হামাসের পাল্টাপাল্টি হামলা চলে। গাজা থেকে ইসরায়েলের দিকে রকেট ছোড়ার কথা জানিয়ে গত ১০ মার্চ রাত থেকে অধিকৃত এই উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের স্থাপনায় বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ২৩২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অর্ধশতাধিক শিশু রয়েছে। অপর দিকে ইসরায়েলে হামাসের ছোড়া রকেটে ১৩ জন নিহত হয়েছেন। অবশেষে, ২১ মে ইসরায়েল প্রশাসন এবং হামাস দুই পক্ষই যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়ে।
এই সংঘর্ষেরে সাথে যুক্ত করে শেয়ার করে এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে চোখে কাপড় বাধা একটি তরুন ছেলেকে গ্রেফতার করছে বন্দুকধারী দুজন পুলিশ। পোস্টের ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, “যুদ্ধ বিরতির পরেও ফিলিস্তিনের যুবকদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে ইজরায়েল বাহিনী”।
তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি এই দাবি ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিকর। ২০১৪ সালের ফিলিস্তিনের একটি ছবিকে সম্প্রতির সংঘর্ষের সাথে যুক্ত করে ভুয়া পোস্ট ভাইরাল করা হচ্ছে।
তথ্য যাচাই
ছবিটি দেখেই আমাদের সন্দেহ হয় এটি সম্প্রতির ছবি নয় কারণ পুলিশ এবং যুবকের মুখে মাস্ক নেই। এরপর এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে ছবিটিকে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলাফলে, সংবাদ মাধ্যম ‘আল আরাবিয়া’র ২০১৪ সালের একটি প্রতিবেদনে এর অনুসন্ধান পাই। ভাইরাল এই ছবির ক্যাপশনে আরবি ভাষায় লেখা রয়েছে, “সামঝোতা বাতিল হওয়ায় ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক এবং হিব্রোনে গ্রেফতার (গেট্টি)”।
সংবাদ মাধ্যম ‘আল জাজিরা’র একটি প্রতিবেদনেও এই ছবিটি দেখতে পাই। সেখানেও বলা হয়েছে এটি ‘গেট্টি ইমেজেস’র ছবি। এরপর কিওয়ার্ড সার্চ করে স্টক ছবির সংস্থা গেট্টি ইমেজেসর ওয়েবসাইটে ছবিটিকে খুঁজে বের করি। ছবির শীর্ষকে লেখা রয়েছে “ইসরায়েল-ফিলিস্তিন-সংঘর্ষ-গুলি ছোড়া-গ্রেফতার”। ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, “গত সপ্তাহে দক্ষিণের ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক শহরে একটি হামালায় একজন ইসরায়েলি পুলিশ অফিসার গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী সন্দেহভাজন ফিলিস্তিনিদের গ্রেফাতার করে। এই ঘটনার দোষীদের ধরতে পুলিশ ২৪ এপ্রিল, ২০১৪, ডের সামেট গ্রামে তল্লাশি চালায়।“ ছবিটি তুলেছেন, ‘হাজেম বাদের’। অর্থাৎ, এর থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় এটি ২০১৪ সালের ছবি।
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত পোস্টটি ভুল। ২০১৪ সালের ফিলিস্তিনের একটি ছবিকে সম্প্রতির সংঘর্ষের সাথে যুক্ত করে ভুয়া পোস্ট ভাইরাল করা হচ্ছে।

Title:২০১৪ সালের ছবিকে ফিলিস্তিনের সম্প্রতির ঘটনা দাবি করে ভুয়া পোস্ট ভাইরাল
Fact Check By: Rahul AResult: Missing Context