
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশে বাবা মেয়েকে এবং মা নিজের ছেলেকে বিয়ে করেছে। পোস্টে অন্য একটি ফেসবুক পোস্টের স্কিনশট শেয়ার করা হয়েছে যার ছবিতে দেখা যাচ্ছে একজন মাঝবয়সী লোকের সাথে একজন তরুণী দাড়িয়ে রয়েছে এবং একজন মহিলার একটি ছোট ছেলে দাড়িয়ে রয়েছে। সকলের গলায় একটি করে মালা রয়েছে। স্কিনশটের ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, “হাসির কি আছে 😀মুজীবের গর্বের বাংলাদেশের সুনামগঞ্জের ঘটনা। পৃথিবীর সবচাইতে পবিত্র ধর্মের ঘটনা।বাবা মেয়েকে বিয়ে করেছে বলে মা রাগ করে ছেলেকে বিয়ে করে ফেলল।সত্যিই কি সংস্কৃতি এঁদের তাই না ওঁদের ভাষায় বলতে হয় সুভানাল্লাহ। দুষ্প্রাপ্য তথ্যটি সংগৃহীত।“
তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি এই দাবি ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিকর। ইসলামিক ধর্মগ্রন্থ কোরআন পাঠ শেষে বাবা মায়ের সাথে তোলা সন্তানের ছবিকে ভুয়া এবং কুরুচিকর মন্তব্যের সাথে ভাইরাল করা হচ্ছে।

তথ্য যাচাই
পোস্টে মোট দুটি ছবির একটি কোলাজ রয়েছে। প্রথমে বাঁদিকের ছবিকে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলাফলে ‘ইসলামিক বোর্ড’ নামে একটি ওয়েবসাইটে এই ছবিটি দেখতে পাই। ২০১৬ সালে ছবিটি আপলোট করে হয়েছে এবং এর শীর্ষকে লেখা রয়েছে, “বাবা এবং কন্যা একই সাথে হাফিজে কোরআন হন। বয়স শিখার পথে বাধা হয়ে দাড়ায় না।“
উল্লেখ্য, হাফিজে কোরআন হল একটি ইসলামিক উপাধি। যারা সমগ্র কোরআন মুখস্থ করে ফেলে তাদের এই সম্মান দেওয়া হয়।

একসাথে কোরআন পড়াশুনার কথা বর্ণনা করে ২০১৬ সালে এই ছবিটিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছিল। ২০১৮ সালের একটি পোস্টেও এই একই বর্ণনার সাথে এই ছবিটিকে শেয়ার করা হয়। এই পোস্টগুলির ক্যাপশনে উর্দু ভাষায় লেখা রয়েছে, “অভিনন্দন… মাশাআল্লাহ বাবা এবং মেয়ে একই সাথে হাফিজ (কোরআন মুখস্থ করেছেন) হলেন। আল্লাহ লিখুন।“
এর থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় বাবার সাথে কন্যার সাধারণভাবে তোলা ছবিকে ভুয়া দাবির সাথে শেয়ার করা হচ্ছে।

এরপর অন্য ছবিটিকে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ডান দিকের ছবির অনুসন্ধান শুরু করি। ২০২০ সালে ছবিটি একটি ফেসবুক পেজ থেকে শেয়ার করা হয় যার ক্যাপশনে উর্দু ভাষায় লেখা রয়েছে, “আজ আমার ছেলের কোরআন পাঠ সম্পন্ন করেছে। আপনারা ওকে অভিনন্দন জানিয়ে আনন্দ ভাগ করে নিন।“
এছাড়া এই দুটি ছবির সাথে বিয়ে সংক্রান্ত কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। কোরআন পাঠ শেষে অভিভাবকের সাথে সন্তানদের তোলা এই ছবিদ্বয়কে বিভ্রান্তিকর দাবি এবং কুরুচিকর মন্তব্যের সাথে শেয়ার করা হচ্ছে।
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুল ও ভিত্তিহীন। ইসলামিক ধর্মগ্রন্থ কোরআন পাঠ শেষে বাবা মায়ের সাথে তোলা সন্তানের ছবিকে ভুয়া এবং কুরুচিকর মন্তব্যের সাথে ভাইরাল করা হচ্ছে।

Title:কোরআন পড়া শেষে বাবা-মেয়ের একসাথে তোলা ছবিকে কুরুচিকর মন্তব্যের সাথে ভাইরাল করা হচ্ছে
Fact Check By: Rahul AResult: False