
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুটি পুরনো ছবি শেয়ার করে ভুয়ো দাবি করা হচ্ছে, পাকিস্তানে মসজিদে বোমা বিস্ফোরণে প্রান হারিয়েছেন অনেকে। পোস্টে মোট দুটি ছবি রয়েছে। একটিতে দেখা যাচ্ছে বিল্ডিংয়ে আগুন লেগেছে এবং দমকল আগুন নেভাচ্ছে। অন্যটিতে দেখা যাচ্ছে কাফন পরিহিত অনেকগুলি মৃতদেহ পরপর একটি সারিতে রাখা রয়েছে।
তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি এই দাবি ভুয়া এবং বিভ্রান্তিকর। ভারতে ঘটনার দুটি ছবিকে পাকিস্তানে বোমা বিস্ফোরণ দাবি করা ভুয়া পোস্ট ভাইরাল করা হচ্ছে।
তথ্য যাচাই
গুগলে কিওয়ার্ড সার্চ করে সম্প্রতি পাকিস্তানে কোনও মসজিদে বা পাকিস্তানের কোনও বোমা বিস্ফোরণ সংক্রান্ত কোনও খবর খুঁজে পাওয়া যায়নি। এরপর পোস্টের ছবি দুটির তথ্য যাচাই করি।
১ম ছবি
এই ছবিকে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলাফলে সংবাদমাধ্যম ‘কাশ্মীর লাইফ’র একটি প্রতিবেদনে এই ছবিকে দেখতে পাই। এই খবর অনুযায়ী এটি ২০১২ সালের ভারতের শ্রীনগরের দাস্তাগির সাহিব মাজারে আগুন লাগার ছবি।
এরপর কিওয়ার্ড সার্চ করে সংবাদমাধ্যম ‘এবিপি নিউজ’র একটি প্রতিবেদনে এই ঘটনার একটি ভিডিও খুঁজে পাই।
২য় ছবি
এই ছবিটি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পাই সাদা কাফনগুলির ওপর সিএএ-এনআরসি লেখা রয়েছে। এই সিএএ হল ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল যা ২০১৯ সালে পাশ হয়েছিল। এই বিলের পরেই ভারতে দেশজুড়ে বিক্ষোভ আন্দোলনের শুরু হয়।
এই ছবিকে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে সংবাদমাধ্যম জেজেপি নিউজ-এর এক বছর আগের একটি প্রতিবেদনে এই ছবিকে দেখতে পাই। ২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারির এই প্রতিবেদন অনুযায়ী এটি ভারতের আওরাঙ্গাবাদ শহরের সিএএ-এনআরসি বিলের প্রতিবাদের ঘটনা। ওই নব নাগরিকত্ব বিলের বিরোধিতায় সেখানকার বাসিন্দারা গায়ে কফন পরে শুয়ে থাকে।
অর্থাৎ, এই ছবিতে যাদের দেখা যাচ্ছে তার কেউই মৃত নয়। ভারতে সিএএ আইনের বিরোধিতায় করা একটি অভিনব বিক্ষোভের দৃশ্য এটি।
অন্যদিকে, কিওয়ার্ড সার্চ করে ইউটিউবে এই বিক্ষোভের একটি ভিডিও খুঁজে পাই।
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুল। ভারতে ঘটনার দুটি ছবিকে পাকিস্তানে বোমা বিস্ফোরণ দাবি করা ভুয়া পোস্ট ভাইরাল করা হচ্ছে।