সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি গ্রাফিক্স করে দাবি করা হচ্ছে, ঢাবিতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষে আহত ১০। পোস্টের একটি ছবি শেয়ার করে সেটিকে এই ঘটনার দৃশ্য বলে দাবি করা হচ্ছে। এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে সংঘর্ষের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে এবং একজন যুবক বন্দুক তাক করে এবং অন্যজন ধারালো অস্ত্র হাতে নিয়ে একে ওপরের মুখোমুখি দাড়িয়ে আছে। গ্রাফিক্সের ওপর শিরোনাম হিসেবে লাখে রয়েছে – ঢাবিতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ১০।

গ্রাফিক্সের ওপরে আরও লেখা রয়েছে, “ঢাবিতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ১০ ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে কেন্দ্রীয় সংসদ কর্তৃক আয়োজিত কর্মসূচিতে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অপরাজেয় বাংলার সামনে কেন্দ্রীয় সংসদ কর্তৃক আয়োজিত শোভাযাত্রা শুরুর পূর্বমুহূর্তে সংক্ষিপ্ত আলােচনা সভায় জায়গা নেয়াকে কেন্দ্র করে ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসিমউদদীন হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। এতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যসহ উভয়পক্ষের প্রায় ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়। পরে কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।“

তথ্য যাচাই করে দেখতে পেয়েছি এই দাবি ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিকর। ২০১৫ সালের একটি ছবির ঢাবির সম্প্রতির ঘটনার সাথে যুক্ত করে ভুয়া খবর ভাইরাল করা হচ্ছে।

ফেসবুক পোস্টআর্কাইভ

তথ্য যাচাই

এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে প্রথমে গ্রাফিক্সের ছবিকে ক্রপ টুলের সাহায্যে আলাদা করে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। সংবাদমাধ্যম 'বাংলাদেশ প্রতিদিন’-এর একটি প্রতিবেদনে এর অনুসন্ধান পাওয়া যায়। ২০১৫ সালের ১৭ ডিসেম্বর প্রকাশিত এই প্রতিবেদনের শিরোনামে লেখা রয়েছে - চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রলীগ-শিবির সংঘর্ষ, গুলি। ভাইরাল ছবির একটি সাদা কালো সংস্করণ প্রতিবেদনে দেওয়া রয়েছে। জানতে পারি, ওই বছর বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজের শহীদ মিনারে ফুল দিতে এসে সংঘর্ষের মুখোমুখি হয় শিবির ও ছাত্রলীগ। প্রতিবেদনটি পড়ুন এখানে

‘বাংলা টেলিগ্রাফ’ নামে আরও একটি সংবাদমাধ্যমে ২০১৫ সালের ১৬ ডিসেম্বরের প্রতিবেদনেও এই ছবি দেখতা পাওয়া যায়। ওই প্রতিবেদনেও একই দাবি করা হয়েছে। সঙ্গে এই সংঘর্ষের আরও একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। ৬ বছর আগের এই ঘটনায় পুলিশ ৪০ জনকে গ্রেফতার করে। প্রতিবেদনটি পড়ুন এখানে

অন্যদিকে, ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সংগঠনের সুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। ‘সময়ের কণ্ঠস্বর’ সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, “ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল ছোড়াছুড়িতে লেখক ভট্টাচার্যসহ ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের অন্তত ১০-১৫ জন নেতাকর্মী আহত হন। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।“

অতএব, সমস্ত তথ্য এবং প্রমাণ সাপেক্ষে স্পষ্ট হয়ে ২০১৫ সালের একটি ছবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্প্রতির ঘটনার সাথে যুক্ত করে ভুয়া খবর ছড়ানো হচ্ছে।

নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুল ও ভিত্তিহীন। ২০১৫ সালের একটি ছবির ঢাবির সম্প্রতির ঘটনার সাথে যুক্ত করে ভুয়া খবর ভাইরাল করা হচ্ছে।

Avatar

Title:২০১৫ সালের ছবিকে সম্প্রতির ছাত্রলীগের সংঘর্ষের দৃশ্য দাবি করে ভুয়া পোস্ট ভাইরাল

Fact Check By: Rahul A

Result: Partly False