
সম্প্রতি যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে ছোট্ট বাচ্চার সামনে মাকে ধর্ষণ করেছে দুষ্কৃতীরা। ভিডিওতে কয়েকজন যুবক জবরদস্তি এক ঘরে ঢুকে এবং সেই ঘরে এক যুবক ও এক নারীকে বিবস্ত্র অবস্থায় আটক করে ভিডিও করছেন। এ সময় তাদের পাশেই এক শিশু কান্নাকাটি করতে দেখা যাচ্ছে। ওই নারী বারবার বাধা দিলেও ভিডিও করেন তারা।
ভিডিওটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে,”বাচ্চার সামনে মা কে ধর্ষণ! এটাই আমাদের ধর্ষিত বাংলাদেশ! ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে কেনা! এমন পোস্টের পক্ষে আমি না কিন্তু এটা টাইমলাইনে থাক! যাদের জন্য দেশের এই অবস্থা তাদের ক্ষমা করার সময় এই বোনের কথা মনে রাখা উচিৎ, তাই নয় কি? আল্লাহ এই বিচার যেন হয়। ক্ষমা করে দিও বোন।“
তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি, ২০২৪ সালে মুন্সিগঞ্জ কারাগারের জেলার নুর মোহাম্মদ কয়েদির স্ত্রীর সাথে কুসম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। ওই সময়ে স্থানীয়রা তাদের আপত্তিকর অবস্থায় হাতেনাতে ধরে। ভিদিওত সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করা হয়েছে।
তথ্য যাচাইঃ
এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে আমরা ভিডিওর কি ফ্রেমগুলোকে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলে, ভিডিওর কয়েকটি দৃশ্যের কোলাজ সম্বলিত একটি ফেসবুক পোস্ট পাওয়া যায়। এই পোস্টের ক্যাপশনের মাধ্যমে বিবস্ত্র যুবককে মুন্সিগঞ্জ কারাগারের জেলার নুর মোহাম্মদ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। জেলার নুর এক কয়েদির স্ত্রীর সাথে অনৈতিক কার্যকলাপ করার পরে দুইজনকেই উলঙ্গ অবস্থায় ধরা পড়েন। অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ভিডিও ধারণ করেন। ভিডিও করতে বারণ করলেও তিনি কর্ণপাত না করে ভিডিও করেন এবং একটি ফেসবুক পেইজে আপলোড করে দেন। পোস্টের পিন কমেন্টে সেই ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে।
ফেসবুক পোস্ট | আর্কাইভ |
এই তথ্য মাথায় রেখে গুগলে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে কালবেলা(আর্কাইভ), ‘আমার বিক্রমপুর’, ‘উৎসবের আলো’ সহ ‘খবর সকাল বিকাল’-এর প্রতিবেদনে এই ভিডিওকে ঘিরে লেখা পাওয়া যায়। প্রতিবেদনগুলো থেকে জানা যায়, ভিডিওটি ২০২৪ সালের মার্চ মাসের। নুর মোহাম্মদ তখন মাগুরা জেলা কারাগারে দায়িত্বরত ছিলেন। সেই সময় এক ব্যক্তির স্ত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ বিভাগসহ জেলা কারাগারের কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। পরে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হলে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। নুর মোহাম্মদ মৃধা মুন্সীগঞ্জের জেলা কারাগারের জেলার হিসেবে কর্মরত। নুর মোহাম্মদ পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নওমালা ইউনিয়নের বাসিন্দা।
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডো এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, বাচ্চার সামনে মাকে ধর্ষণ করার দাবিটি ভুয়া। মুন্সিগঞ্জ কারাগারের জেলার নুর মোহাম্মদ কয়েদির স্ত্রীর সাথে কুসম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার ভিডিওকে ভুয়া দাবির সাথে শেয়ার করা হচ্ছে।

Title:বাচ্চার সামনে মাকে ধর্ষণ? জানুন ভাইরাল ভিডিওর সত্যতা
Fact Check By: Nasim AkhtarResult: False