মস্তকবিহীন মৃত ছেলের শবদেহ কোলে নিয়ে কাঁদছেন ফিলিস্তিনি বাবা ? জানুন ছবির সত্যতা
চলমান ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘর্ষের প্রসঙ্গে যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে, মস্তকবিহীন মৃত ছেলের শবদেহ কোলে নিয়ে কাঁদছেন পিতা। ছবিতে এক লাশকে কোলে নিয়ে ব্যাকুলভাবে ক্রন্দনরত অবস্থায় দেখা যাচ্ছে এক যুবককে। পোস্টের ক্যাপশনে লেখা হয়েছে,” পিতার কোলে সন্তানের মস্তক বিহীন লাশ। হ্যাঁ এই ভাবে ৪০টি শিশুকে হত্যা করেছে হামাস জঙ্গীরা আল্লাহ আকবর ধ্বনি দিয়ে।“
তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি পোস্টের দাবিটি বিভ্রান্তিকর। পুরনো ও অপ্রাসঙ্গিক ছবিকে চলমান ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘর্ষের আবহে শেয়ার করা হচ্ছে।
তথ্য যাচাই
ভাইরাল ছবিটি সম্পর্কিত আসল তথ্য পেতে ছবিটিকে গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলে, ছবিটি কেন্দ্রিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ‘দি ওয়াশিংটন পোস্ট’-এর একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায় ২০১২ সালের ১৫ তারিখের এই প্রতিবেদন অনুসারে, ক্রন্দনরত ব্যাক্তির নাম জিহাদ মাশরাউই। তিনি বিবিসি সংবাদ সংস্থার একজন সাংবাদিক। সেই বছর ইজরায়েল ফিলিস্তিনে আক্রমন করেছিলেন এবং সেই হামলায় জিহাদ মাশরাউই-এর ১১ মাস বয়সের ছেলে ওমার ও ভ্রাতৃবধূর মৃত্যু হয়েছিল এবং তার ভাই ও এক চাচা গুরুতর আহত হয়েছিলেন।
দি ওয়াশিংটন পোস্ট প্রতিবেদন | আর্কাইভ |
অন্যান্য প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য পাওয়া যায়। প্রতিবেদনগুলোর কোথাও ছেলের মস্তক ছিন্ন হওয়ার উল্লেখ করা হয়নি। ( বিবিসি প্রতিবেদন, আল আরাবিয়া নিউজ, দি গার্ডিয়ান)
বিবিসি-এর ২০১২ সালেরই এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার অফিসের একটি খসড়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে গাজায় বিবিসি সাংবাদিকের ১১ মাস বয়সী ছেলে ওমর মাশরাভি ইসরায়েলি নয়, ফিলিস্তিনি রকেটের আঘাতে নিহত হয়ে থাকতে পারে।
সুতরাং, তথ্যের ভিত্তিতে প্রমানিত হয় যে, ছবিটি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘর্ষেরই কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে চলমান সংঘাতের সাথে সম্পর্কিত নয়। ফিলিস্তিনি বাবা তার ছেলের শবদেহ কোলে দাঁড়িয়ে থাকার ভাইরাল এই ছবিটি ২০১২ সালের।
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি বিভ্রান্তিকর। পুরনো ও অপ্রাসঙ্গিক ছবিকে চলমান ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘর্ষের আবহে শেয়ার করা হচ্ছে।
Title:মস্তকবিহীন মৃত ছেলের শবদেহ কোলে নিয়ে কাঁদছেন ফিলিস্তিনি বাবা ? জানুন ছবির সত্যতা
Written By: Nasim AkhtarResult: Missing Context