
২০১৯ সালের একটি ঘটনার কয়েকটি ছবি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে ভুয়ো দাবি করা হচ্ছে ঝালকাঠির নলছিটিতে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর করে খালে ফেলে দেওয়া হল। পোস্টটিতে অনেকগুলি ছবি শেয়ার করা হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে একটি মূর্তির ধ্বংসাবশেষকে একটি জলাশয় থেকে একটি ভ্যানে তোলা হচ্ছে। পোস্টটির ক্যাপশনে লেখা রয়েছে,
“****ব্রেকিং নিউজ**** ঝালকাঠিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধের ভাষ্কর্য ভাঙচুর…!!! যারা হিন্দুদের মন্দিরের প্রতিমা ও মন্দির ভাঙচুর করে তাদের যদি উপযুক্ত বিচার করা হতো তাহলে আজ এই ধরনের জঘন্য ঘটনার সম্মুখীন আমাদের হতে হতো না।
নলছিটির ষাটপাকিয়া বাজারে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভের মুক্তিযোদ্ধাদের ভাস্কর্য ও বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙ্গে চুরমার করে খালে ফেলে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। নলছিটি থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। জানা গেছে ,বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত মফিজ উদ্দিন হাওলাদার নিজ অর্থায়নে এই স্মৃতি সৌধটি নির্মাণ করেছিলেন।
তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বরিশালের কোতোয়ালী রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তার পুত্র মোঃ মাসুম হাওলাদার জানায়, রাত দশটার সময় বাজার থেকে বাড়িতে চলে যান। গভীর রাতে কে বা কাহারা এই অপকর্ম চালিয়েছে তিনি জানেন না।
তবে কি দুধ কলা দিয়ে পোষা কাল সাপ দংশন শুরু করে দিয়েছে? আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে যদি ওরা বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের ভাষ্কর্য ভাঙচুর করতে পারে তাহলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে কি হতে পারে তা সহজে আনুমান করা যায়!
দেশের সচেতন নাগরিক ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের মানুষ হিসেবে আমরা এই জঘন্য ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং অবিলম্বে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।“
তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি এই দাবি ভুয়ো এবং বিভ্রান্তিকর। এটি ২০১৯ সালের একটি ঘটনা। পুরনো ছবিগুলিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে ভুয়ো দাবি করা হচ্ছে।
তথ্য যাচাই
শুরুতেই এই দাবির সত্য যাচাই করতে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় কিওয়ার্ড সার্চ করি। ফেসবুকে ২০১৯ সালের একটি পোস্ট দেখতে পাই যার সাথে সম্প্রতি শেয়ার করা পোস্টটি হুবহু মিলে যায়। একই ছবিগুলিকে একই ক্যাপশনের সাথে ওই বছরের ২৫ নভেম্বর শেয়ার করা হয়েছিল।
এরপর কিওয়ার্ড সার্চ করে ঝালকাঠিতে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য ও বঙ্গবন্ধুর মূর্তি ভাঙচুরের বেশি কয়েকটি প্রতিবেদন দেখতে পাই যেখানে পোস্টের ছবিগুলি দেখতে পাওয়া যায়। সংবাদমাধ্যম ‘কালের কন্ঠ’র ২০১৯ সালের ২৪ নভেম্বরের একটি প্রতিবেদনে থেকে জানতে পারি
“ঝালকাঠির নলছিটিতে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য ও বঙ্গবন্ধুসহ চার মুক্তিযোদ্ধার ম্যুরাল ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার রাতে নলছিটি উপজেলার ষাইটপাকিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পাশের একটি খাল থেকে ভাঙাচোরা ম্যুরাল চারটি উদ্ধার করে।“
‘ঢাকা ট্রিবিউন’র ২০১৯ সালের ২৪ নভেম্বরের একটি প্রতিবেদনেও এই ঘটনার উল্লেখ পাই। সঙ্গে ভাইরাল হওয়া পোস্টের ছবিও এই প্রতিবেদনে পাওয়া যায়।
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুল। ২০১৯ সালে ঝলকাঠিতে বঙ্গবন্ধুর মূর্তি ভাঙচুরের একটি ঘটনার ছবিকে ভুয়ো দাবির সাথে পুনরায় ভাইরাল করা হচ্ছে।

Title:২০১৯ সালের বঙ্গবন্ধুর মূর্তি ভাঙচুরের ছবিকে ভুয়ো দাবির সাথে পুনরায় শেয়ার
Fact Check By: Rahul AResult: False